বার্ড অধ্যাদেশ, ১৯৮৬ অনুযায়ী একাডেমীর মূল উদ্দেশ্য ও কার্যাবলী হচ্ছে:
প্রশিক্ষণ
বার্ডে একটি জাতীয় প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান। সরকারী ও বেসরকারি পর্যায়ের কর্মকর্তা, জাতিগঠনমূলক বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কর্মরত কর্মকর্তা, আন্তর্জাতিক বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রী, স্থানীয় সরকার প্রতিনিধি, গ্রাম সংগঠনের প্রতিনিধি এবং সেচ্ছাসেবী সংস্থায় কর্মরত ব্যক্তিবর্গকে বার্ড নিয়মিত ভাবে প্রশিক্ষণ প্রদান করে যাচ্ছে। তাছাড়া, বিদেশী ছাত্র-ছাত্রী, উচ্চ পর্যায়ের ডেলিগেট, সরকারি কর্মকর্তা এবং কুটনৈতিক মিশনের ব্যক্তিবর্গ নিয়মিত বার্ড পরিদর্শন করে।
প্রশিক্ষণ, গবেষণা ও প্রায়োগিক গবেষণার এই সমন্নিত প্রয়োগের ফলে বার্ড একটি বিশেষায়িত প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছে। এই বিশেষত্বের কারণে বাডের্র প্রশিক্ষণের প্রতি সরকারি, বেসরকারি ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ের বিশেষ আগ্রহ রয়েছে। ১৯৫৯ হতে ডিসম্বর ২০১৪ পর্যন্ত বার্ডে ২,৪৪,৮০৩ জন প্রশিক্ষণার্থী ও অন্যান্য ব্যক্তিবর্গ প্রশিক্ষণ গ্রহণ ও পরিদর্শন করেছেন। বার্ড প্রতিবছর গড়ে ১২০টি প্রশিক্ষণ কোর্স পরিচালনা করে। ইতোমধ্যেই বার্ড পল্লী উন্নয়ন সংক্রান্ত ৩০টি মডিউল প্রণয়ন করেছে। এই মডিউলের উপর জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ের বিভিন্ন প্রশিক্ষণার্থী প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে আসছেন। প্রশিক্ষণ কোর্সগুলো নির্দিষ্ট বাজেটের আলোকে সম্পন্ন করা হয়। প্রশিক্ষণ কোর্সে অংশগ্রহণ ও প্রশিক্ষণ কোর্স সংগঠনের বিষয়ে মহাপরিচালক কিংবা পরিচালক (প্রশিক্ষণ), বার্ড, কোটবাড়ী, কুমিল্লা-৩৫০৩, বাংলাদেশ বরাবর অনুরোধ পাঠানো যাবে।
গবেষণা
বার্ড প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই দেশের আর্থ-সামাজিক অবস্থার উপর গবেষণা পরিচালনা করে আসছে। গবেষণায় প্রাপ্ত ফলাফল প্রশিক্ষণের তথ্য/উপাত্ত হিসেবে ব্যবহার করা হয়। তাছাড়া, প্রাপ্ত ফলাফল নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণে সহায়তা করে থাকে। একাডেমীর গবেষণার ফলাফল গবেষণা প্রকাশনা, জার্নাল, নিউজলেটার ও ওয়েবসাইটের মাধ্যমে ব্যাপক প্রচারের ব্যবস্থা করা হয়ে থাকে।
বার্ড জুন ২০১৩ পর্যন্ত প্রায় ৬৩৯টি গবেষণা পরিচালনা করেছে। সময়ের সাথে সাথে একাডেমী বিভিন্ন আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের সাথে সু-সম্পর্কের ব্যাপ্তি ঘটিয়েছে এবং উন্নয়ন বিষয়ক বিভিন্ন গবেষণা কার্যক্রম সম্পন্ন করেছে। গত প্রায় ৫৫ বছরে Michigan State University, Harvard University, Gottingen University, Bath University, Upsala University, Kyoto University, Population Council, ICOMP, APDC, FAO, UNDP, UNESCO JICA, IDRC, CIRDAP প্রভৃতি প্রতিষ্ঠান একাডেমীর অন্যতম গবেষণা সহযোগী সংস্থা হিসেবে কাজ করেছে। বার্ড CIRDAP-Gi Link Institute হিসেবে কাজ করে যাচ্ছে। তাছাড়া, একাডেমী SAARC -এর জাতীয় লিয়াজোঁ কেন্দ্র হিসেবেও কাজ করছে।
বার্ডের অনুষদ সদস্যদের প্রশিক্ষণ, গবেষণা ও প্রায়োগিক গবেষণার উপর ব্যাপক অভিজ্ঞতা রয়েছে। নিজস্ব অর্থায়ন ছাড়াও বার্ড প্রতি বছর বিভিন্ন সরকারি, বেসরকারি ও দাতা সংস্থার আর্থিক সহায়তায় গবেষণা পরিচালনা করে থাকে। বার্ড বিভিন্ন বিষয়ে অভিজ্ঞ অনুষদ সদস্যদের সহায়তায় পল্লী উন্নয়ন সংক্রান্ত বিভিন্ন ক্ষেত্রে গবেষণা পরিচালনা করে থাকে । গবেষণা পরিচালনার জন্য অনুরোধ পাঠানোর ঠিকানাঃ মহাপরিচালক/পরিচালক (গবেষণা), বার্ড, কোটবাড়ী, কুমিল্লা-৩৫০৩। গবেষণা প্রকাশনাসমূহ বার্ডের প্রকাশনা শাখায় বিক্রি করা হয়।
প্রায়োগিক গবেষণা
একাডেমী পল্লী উন্নয়নের ক্ষেত্রে নিত্য-নতুন মডেল উদ্ভাবনের জন্য প্রায়োগিক গবেষণা কর্মসূচি পরিচালনা করে থাকে। সরকারি বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা, উন্নয়ন সহযোগী প্রতিষ্ঠান, গ্রামের সাধারণ জনগণ এবং স্থানীয় নেতৃত্বকে সমন্বয় করে এই ধরণের কর্মসূচি হাতে নেয়া হয়। বার্ডের যাবতীয় প্রায়োগিক গবেষণা সংক্রান্ত কার্যক্রম গ্রহণ, তত্ত্বাবধান ও সমন্বয়ের জন্য দায়িত্ব প্রাপ্ত বিভাগ হচ্ছে প্রকল্প বিভাগ।
বার্ড এ পর্যন্ত প্রায় ৫০টি পল্লী উন্নয়ন সংক্রান্ত প্রায়োগিক গবেষণা পরিচালনা করেছে। বার্ড উদ্ভাবিত বিখ্যাত কুমিল্লা মডেলের ফলাফলস্বরূপ বিভিন্ন কর্মসূচি বর্তমানে সারা দেশে বাস্তবায়িত হচ্ছে। কুমিল্লা মডেলের ৪টি কর্মসূচি হলো:
১. দ্বি-স্তর বিশিষ্ট সমবায় ।
২. থানা প্রশিক্ষণ (বর্তমানে উপজেলা) ও উন্নয়ন কেন্দ্র।
৩. পল্লী পূর্ত কর্মসূচি এবং
৪. থানা (বর্তমানে উপজেলা) সেচ কর্মসূচি।
তাছাড়া, বর্তমানে বার্ডের একটি কর্মসূচি (সার্বিক গ্রাম উন্নয়ন কর্মসূচি) সরকারি পর্যায়ে সারা দেশে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে এবং অপর একটি কর্মসূচি (ক্ষুদ্র কৃষক উন্নয়ন কর্মসূচি) সরকার কর্তৃক ফাউন্ডেশনে রূপান্তর করা হয়েছে।